চরচা প্রতিবেদক

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে একটি গোষ্ঠী জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে সাতজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রধান সন্দেহভাজন এখনো পলাতক। প্রধান সন্দেহভাজনসহ জড়িতদের মধ্যে চারজনই জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে ছিলেন এবং ৫ আগস্টের পর মুক্তি পান।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের পর তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্যই। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে গ্রেপ্তার সাতজন সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ’ (জেএমজেবি)-এর সমর্থক। তারা বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা করছিল।
গত ২৬ ডিসেম্বর সকালে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের পর অভিযান চালিয়ে একটি ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও রাসায়নিক উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন মূল সন্দেহভাজন শেখ আল-আমিন।
এ ঘটনার পর দিন পুলিশ বাদি হয়ে মূল অভিযুক্ত শেখ আল আমিন (৩২) এবং গ্রেপ্তার শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মূসা ওরফে ডিবা সুলতান (৩২), মো. আমিনুর ওরফে দর্জি আমিন (৫০), মো. শাফিয়ার রহমান ফকির (৩৬), আছিয়া বেগম (২৮), ইয়াসমিন আক্তার (২১) ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমার (৩২) নাম উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া র্যাবের অভিযানে আহসান উল্লাহ নামে আরেক সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, পলাতক আসামি শেখ আল আমিনের বিরুদ্ধে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে ছয়টি, যার পাঁচটিই আগের। শেষোক্ত মামলাগুলো মূলত জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে মারামারি এবং নারী ও শিশু ধর্ষণের অভিযোগে আরও দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার পারভীনের মালিকানাধীন একতলা ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনের উত্তর পাশে থাকা ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা’র দুটি কক্ষের দেয়াল ও বাথরুমের ফলস ছাদ ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণে ভবনের ভেতরে থাকা শেখ আল-আমিনের দুই ছেলে উমায়ের (১০) ও আব্দুর রহমান (২) গুরুতর আহত হয়। তাদের মাথা, চোখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।
ঘটনার পর আহত শিশুদের প্রথমে স্থানীয় আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্তানেরা গুরুতর আহত হলেও ঢামেক হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা করিয়ে আল-আমিন ও তার স্ত্রী দ্রুত পালিয়ে যান।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, পলাতক আসামি শেখ আল-আমিন ২০২২ সাল থেকে তার স্ত্রীর বড় ভাই হারুনের মাধ্যমে ওই ভবনের চারটি কক্ষ ভাড়া নেন। একটি কক্ষে পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও বাকি তিনটি কক্ষে ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হতো। অভিযোগ রয়েছে, এই মাদ্রাসার আড়ালেই চলছিল বোমা ও বিস্ফোরক তৈরির কাজ।
বিস্ফোরণের পর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল টিম, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। ২৭ ডিসেম্বর আল-আমিনের ভাড়া বাসা তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, অভিযানে ধ্বংসস্তূপ থেকে ৯টি তাজা ককটেল, একটি আইইডি সদৃশ গোলাকার বোমা, ৫টি ইলেকট্রনিক বোমা সদৃশ বস্তু, দুটি শর্টগানের কার্তুজ, ৫০০ গ্রাম লোহার বল, শর্ট সার্কিট ডিভাইস ও তারকাটা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ৭টি জারে ২১০ লিটার এবং আরও ২টি জারে ৬০ লিটার হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, ৩৮ লিটার নাইট্রিক অ্যাসিড, ১ লিটার অ্যাসিটোন, ২৫ কেজি সাদা রঙের পাউডার, বিভিন্ন রঙের ১২ লিটার তরল পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি লাল রঙের কর্কযুক্ত কনটেইনারে ‘WACKER’ লেখা ১৫ লিটার তরল পদার্থ এবং আরও দুই কেজি সাদা পাউডার পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১৭টি ‘জিহাদি’ বইও উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জহুরুল ইসলাম চরচাকে বলেন, “মূল সন্দেহভাজন শেখ আল আমিনের নামে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে। এই ছয় মামলার মধ্যে ৫টি মামলাই আগে থেকে রুজু ছিল। তিনি তিন বছর ধরে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মূসা ওরফে ডিবা সুলতান, মো. শাফিয়ার রহমান ফকির ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমার নামেও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছিল। তারাও কারাগারে ছিলেন। শেখ আল আমিনসহ এ চারজনই ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান।”
ঘটনার পরদিন ২৭ ডিসেম্বর হাসনাবাদ হাউজিং ও বাসাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত তিন নারীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই জেএমজেবি সংশ্লিষ্টতার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জহুরুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে জানান, “গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক দ্রব্যাদি ব্যবহার করে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে একযোগে একাধিক মন্দিরে হামলা চালানো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকের হুমকিতে ফেলা। একই সঙ্গে তারা বিচ্ছিন্নভাবে সমবেত হয়ে নাশকতা সৃষ্টি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার পরিকল্পনা করেছিল। সংগঠনের সদস্যদের উসকানি ও উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে তারা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এর পাশাপাশি ইসলামী হুকুমতের নামে উগ্র শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদেরকে জিহাদি কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।”
রোববার গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তিন পুরুষ আসামিকে সাত দিন করে এবং তিন নারী আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ সোমবার অপর আসামি আহসান উল্লাহর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তদন্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম চরচাকে বলেন, “উদ্ধারকৃত কেমিক্যাল দিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরক তৈরি করা সম্ভব। এসব উপাদান পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত শেষে ঘটনার পূর্ণ রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।”

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে একটি গোষ্ঠী জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে সাতজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রধান সন্দেহভাজন এখনো পলাতক। প্রধান সন্দেহভাজনসহ জড়িতদের মধ্যে চারজনই জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে ছিলেন এবং ৫ আগস্টের পর মুক্তি পান।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের পর তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্যই। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে গ্রেপ্তার সাতজন সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ’ (জেএমজেবি)-এর সমর্থক। তারা বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা করছিল।
গত ২৬ ডিসেম্বর সকালে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের পর অভিযান চালিয়ে একটি ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও রাসায়নিক উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন মূল সন্দেহভাজন শেখ আল-আমিন।
এ ঘটনার পর দিন পুলিশ বাদি হয়ে মূল অভিযুক্ত শেখ আল আমিন (৩২) এবং গ্রেপ্তার শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মূসা ওরফে ডিবা সুলতান (৩২), মো. আমিনুর ওরফে দর্জি আমিন (৫০), মো. শাফিয়ার রহমান ফকির (৩৬), আছিয়া বেগম (২৮), ইয়াসমিন আক্তার (২১) ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমার (৩২) নাম উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া র্যাবের অভিযানে আহসান উল্লাহ নামে আরেক সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, পলাতক আসামি শেখ আল আমিনের বিরুদ্ধে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে ছয়টি, যার পাঁচটিই আগের। শেষোক্ত মামলাগুলো মূলত জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে মারামারি এবং নারী ও শিশু ধর্ষণের অভিযোগে আরও দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার পারভীনের মালিকানাধীন একতলা ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনের উত্তর পাশে থাকা ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা’র দুটি কক্ষের দেয়াল ও বাথরুমের ফলস ছাদ ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণে ভবনের ভেতরে থাকা শেখ আল-আমিনের দুই ছেলে উমায়ের (১০) ও আব্দুর রহমান (২) গুরুতর আহত হয়। তাদের মাথা, চোখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে।
ঘটনার পর আহত শিশুদের প্রথমে স্থানীয় আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্তানেরা গুরুতর আহত হলেও ঢামেক হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা করিয়ে আল-আমিন ও তার স্ত্রী দ্রুত পালিয়ে যান।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, পলাতক আসামি শেখ আল-আমিন ২০২২ সাল থেকে তার স্ত্রীর বড় ভাই হারুনের মাধ্যমে ওই ভবনের চারটি কক্ষ ভাড়া নেন। একটি কক্ষে পরিবার নিয়ে বসবাস করলেও বাকি তিনটি কক্ষে ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হতো। অভিযোগ রয়েছে, এই মাদ্রাসার আড়ালেই চলছিল বোমা ও বিস্ফোরক তৈরির কাজ।
বিস্ফোরণের পর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল টিম, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। ২৭ ডিসেম্বর আল-আমিনের ভাড়া বাসা তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, অভিযানে ধ্বংসস্তূপ থেকে ৯টি তাজা ককটেল, একটি আইইডি সদৃশ গোলাকার বোমা, ৫টি ইলেকট্রনিক বোমা সদৃশ বস্তু, দুটি শর্টগানের কার্তুজ, ৫০০ গ্রাম লোহার বল, শর্ট সার্কিট ডিভাইস ও তারকাটা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ৭টি জারে ২১০ লিটার এবং আরও ২টি জারে ৬০ লিটার হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, ৩৮ লিটার নাইট্রিক অ্যাসিড, ১ লিটার অ্যাসিটোন, ২৫ কেজি সাদা রঙের পাউডার, বিভিন্ন রঙের ১২ লিটার তরল পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি লাল রঙের কর্কযুক্ত কনটেইনারে ‘WACKER’ লেখা ১৫ লিটার তরল পদার্থ এবং আরও দুই কেজি সাদা পাউডার পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১৭টি ‘জিহাদি’ বইও উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জহুরুল ইসলাম চরচাকে বলেন, “মূল সন্দেহভাজন শেখ আল আমিনের নামে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে। এই ছয় মামলার মধ্যে ৫টি মামলাই আগে থেকে রুজু ছিল। তিনি তিন বছর ধরে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মূসা ওরফে ডিবা সুলতান, মো. শাফিয়ার রহমান ফকির ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমার নামেও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছিল। তারাও কারাগারে ছিলেন। শেখ আল আমিনসহ এ চারজনই ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান।”
ঘটনার পরদিন ২৭ ডিসেম্বর হাসনাবাদ হাউজিং ও বাসাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃত তিন নারীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই জেএমজেবি সংশ্লিষ্টতার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জহুরুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে জানান, “গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক দ্রব্যাদি ব্যবহার করে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে একযোগে একাধিক মন্দিরে হামলা চালানো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকের হুমকিতে ফেলা। একই সঙ্গে তারা বিচ্ছিন্নভাবে সমবেত হয়ে নাশকতা সৃষ্টি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার পরিকল্পনা করেছিল। সংগঠনের সদস্যদের উসকানি ও উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে তারা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এর পাশাপাশি ইসলামী হুকুমতের নামে উগ্র শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদেরকে জিহাদি কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।”
রোববার গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তিন পুরুষ আসামিকে সাত দিন করে এবং তিন নারী আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ সোমবার অপর আসামি আহসান উল্লাহর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তদন্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম চরচাকে বলেন, “উদ্ধারকৃত কেমিক্যাল দিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরক তৈরি করা সম্ভব। এসব উপাদান পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত শেষে ঘটনার পূর্ণ রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।”