শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজে ফেরার ঘোষণা রাবি শিক্ষকের

শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজে ফেরার ঘোষণা রাবি শিক্ষকের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কাজী জাহিদ। ছবি: ফেসবুক

নিরাপত্তা আশঙ্কার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পুনরায় একাডেমিক কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কাজী জাহিদ।

আজ মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই সিদ্ধান্ত জানান কাজী জাহিদ।

এই শিক্ষক জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্মার্ট কার্ডের অনিয়ম ও মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখে তিনি ৫৭ ধারায় মামলায় ৭১ দিন জেল খেটেছেন। কিন্তু মাথা নত করেননি।

কাজী জাহিদ বর্তমানে সিএসই বিভাগের একটি ব্যাচের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, “শীতকালীন ছুটির আগেই ফলাফল প্রকাশ না করলে পরবর্তী ব্যাচের পরীক্ষার কার্যক্রম ঝুলে যাবে এবং এতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তাই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মব-বিরোধী অবস্থানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি পুনরায় একাডেমিক কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।

এই শিক্ষক জানান, আজ থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ফলাফল সংক্রান্ত সকল কাজে নিয়মিত অংশগ্রহণ করবেন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী যদি চাকরি করতে আসে, তাহলে তাদের কলার ধরে টেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে।”

এ ছাড়া শনিবার আম্মার এক ফেসবুক পোস্টে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ শীর্ষক কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এরপর গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন এই শিক্ষক। তার সেই প্রতিবাদের পর দেশের বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, ছাত্রদল ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন মবক্রেসির বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়।

শিক্ষকদের প্রতি করা এই অসম্মানের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষের নিন্দা জানানোকে তিনি নিজের নৈতিক সফলতা হিসেবে দেখছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রশাসনের যে অবস্থা তাতে কার কাছে তিনি নিরাপত্তা চাইবেন? বরং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দিতে এখন সাধারণ মানুষেরই পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

সম্পর্কিত